অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ভিসি স্যার একজন হবে । যিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক চর্চা বেগবান করার জন্য সংগীত,
নাট্যকলা, চিত্রকলার মতো সাবজেক্ট খুলেছেন। তিনি গবেষণার সুযোগ তৈরী করার
জন্য মাইক্রোবায়োলজি সংশ্লিষ্ট সাবজেক্ট খুলেছেন। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার
মান বাড়ানোর জন্য নবীন শিক্ষকদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহিত করছেন। দেশসেরা
মেধাবীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য সংখ্যক
জবিয়ানকে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করিয়েছেন। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে পুরনো
ঢাকায় একটি সাংস্কৃতিক বলয় তৈরী করেছেন। ধর্মীয় নিরপেক্ষতায় ক্যাম্পাসে
বিভিন্ন পুজা এবং স্টার সানডে, বড়দিন সহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন
করেছেন।
অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান |
মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়ার জন্য রাত্রি কালীন লাইব্রেরী খুলেছেন।
ছোট ক্যাম্পাসের সীমাবদ্ধতার মধ্যে ইনডোর গেমস এবং ধুপখোলায় সারাবছর
খেলাধুলা চালু রেখেছেন। সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ, চলচ্চিত্র সংসদ
সহ সতেরটি সংগঠনকে আর্থিক সহয়তা করে প্রতিভা বিকাশের সুযোগ রেখেছেন।
ছাত্রীদের আবাসনের জন্য একটি ছাত্রীহল নির্মাণ করেছেন। ছাত্রদের দখলকৃত
দুটি হল উদ্ধার করছেন। নতুন হল নির্মাণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব
অর্থায়নে কেরানীগঞ্জে জায়গা কিনেছেন। সরকারের সাথে আলোচনা করে নতুন
ক্যাম্পাসের ব্যবস্থা করেছেন। ভর্তি জালিয়াতি বন্ধ করার জন্য নিজস্ব
ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছেন। মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাতে ভর্তি হতে
পারে তার জন্য লিখিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছেন। গরীব অসহায় ছাত্রদের ফ্রী
ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত লাভ
করানোর জন্য আন্তর্জাতিক সংগীত উৎসব সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারের
আয়োজন করা হয়েছে। শত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও প্রথম সমাবর্তন নিজস্ব জায়গায়
করেছেন। করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করার জন্য ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সাথে
চুক্তি স্বাক্ষর করে ছাত্র শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের চিকিৎসা সেবা
নিশ্চিত করেছেন। বিগত ছয় সাত বছরে কর্মকর্তা নিয়োগের প্রায় শতভাগই (
টেকনিক্যাল বাদে) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাসা থেকে যাতায়াতের
জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন জেলায় বাসের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছোট বড় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের
উৎসাহ প্রদান করেন। যে কোন বিষয় নিয়ে যে কোন শিক্ষার্থী যে কোন সময় তাঁর
সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন।
অনেকে লিখেছেন তিনি যুবলীগের নেতা ছিলেন।
যুবলীগ কি বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠন? অনেকে লিখেছেন তিনি টকশো করেন। কিন্তু
একবার ভেবেছেন তিনি টকশোতে উপস্থিত হলে তাঁর সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
নামটাও উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি নিয়মিত কলাম লেখেন। কলামের শেষে তাঁর নামের
পাশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটা লেখা থাকে।
পদ্মাসেতু নির্মাণে এক
কোটি টাকা প্রদান কিম্বা রোহিঙ্গাদের সহয়তা প্রদানে ভিসি ড. মীজানুর
রহমানের নয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উচ্চারিত হয়েছিল।
যিনি
করোনাভাইরাস মোকাবেলা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় দৈনিক হাজিরা
ভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি পরিশোধ করছেন। গরীব অসহায় শিক্ষার্থীদের
আর্থিক সহযোগিতা করেছেন করোনাকালে। ফেসবুকের কল্যানে আমরা জেনেছি আজিমপুর
সহ ঢাকায় আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে বাড়ীওয়ালাদের সাথে কথা বলে
গ্রামে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিবন্ধী
শিক্ষার্থী হাফিজকে চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। যিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষে
একাডেমিক কাউন্সিলে ভূমিকা রাখেন। যিনি শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় সুযোগ
তৈরির জন্য বিদেশি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
যিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত করার জন্য
কাজ করে যাচ্ছেন। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক হওয়া
সত্বেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রকমের অর্জনে
আনন্দিত হন তাকে বহিরাগত বলতে আমার কাছে খারাপ লাগে। জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন
সর্বোচ্চ ( আমার জানামতে)। আমাদের মনে রাখতে হবে এরপর যিনি ভিসি হিসেবে
নিয়োগ পাবেন তিনিও অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক।
অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান একজন মানবিক ভিসি হিসেবে সারাদেশে পরিচিত কিন্তু
আজ কার/ কাদের স্বার্থের কারনে কিম্বা স্বার্থেরহানীর কারনে মিসকিনের ভিসি
হলেন! ষড়যন্ত্র !!!!!
লেখকঃ মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী, সাবেক শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।